আজ পবিত্র শবে বরাত।শাবান মাসের মধ্য রজনী।মুসলিমদের জন্য অনেক পবিত্র একটি রাত। আরবি বছরের অষ্টম মাস শাবান। এ মাসের মধ্যবর্তী দিবাগত রাত হল লাইলাতুম মিন নিসফা শাবান। এটি লাইলাতুল বরাত নামে ব্যাপক পরিচিত। এ রাতকে ঘিরে পক্ষে বিপক্ষে অনেক মত পার্থক্য। কেউ কেউ এ রাতকে ঘিরে আনুষ্ঠানিক ইবাদত বন্দেগীর বিপক্ষে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন আবার কেউ কেউ রাত জেগে ইবাদত করার পক্ষে থাকেন।
লাইলাতুল বরাত তথা ভাগ্য রজনী নিয়ে পক্ষ বিপক্ষ রয়েছে। এ রাতকে লাইলাতুল বরাত বলে অনেকে যেমন বাড়াবাড়ি ও রুসুক রেওয়াজে মেতে ওঠেন আবার অনেকে এ রাতের ইবাদত তথা মর্যাদাকে একেবারেই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে থাকেন। যার কোনোটিই কাম্য নয়। কিন্তু এই রাত নিয়ে অনেক মত দ্বিমত রয়েছে।আজ আমরা দেখবো শবে বরাত সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) কি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ রাতের ইবাদত সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়। এ রাত সম্পর্কে যেসব বর্ননা পাওয়া যায় তা হলো -
<<>> হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়া’লা অর্ধ শাবানের রাতে ( শাবানের ১৪তারিখ দিবাগত রাতে মাখলুখের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতিত আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন'। (ইবনে হিব্বান)
সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন 'জিবরাইল আলাইহিস সালাম আমার কাছে এসেছিলেন এবং বললেন,আপনার প্রভু আপনাকে নির্দেশ দিয়েছেন (জান্নাতুল) বাকিতে যাওয়ার জন্য এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য।'(মুসলিম)
হযরত আলি ইবনে আবি তালিব(রাঃ) বর্ণনা করেন,'রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন মধ্য শাবানের রাত আসে তখন তোমরা এ রাতে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ো এবং দিনে রোজা রাখো।কেননা এ দিন সূর্য অস্ত যাওয়ার পর আল্লাহ পৃথিবীর নিকটতম আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছো আমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী আমি তাকে ক্ষমা করব। কে আছো রিজিকপ্রার্থী আমি তাকে রিজিক দেব। কে আছো রোগমুক্তি প্রার্থনাকারী, আমি তাকে নিরাময় দান করব। কে আছ এই প্রার্থনাকারী। ফজরের সময় হওয়ার আগ পর্যন্ত ( তিনি এভাবে আহবান করেন)। ' ( ইনবে মাজাহ)
আবার আয়েশা রাঃ হতে বর্নিত, রাসুলুল্লাহ সাঃ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তায়া’লা শাবানের মধ্যবর্তী রাতে প্রথম আসমানে অবতীর্ন হন এবং বনু কালবের সমুদয় বকরীর পশমের সংখ্যার চেয়ে বেশি অপরাধী বান্দাদের ক্ষমা করে থাকেন (তিরমিজি শরিফ)।
তাই এই রাতে জেগে থেকে অধিক পরিমাণে আমল করা উচিৎ। বিশেষ করে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাসহ সব রোগ মুক্তির জন্য বিশেষ ভাবে দোয়া করুন। বেশি বেশি কুরআন শরীফ পড়ুন। নিজেদের কৃত গুনাহ থেকে তওবা করুন।
তেমনি আবার কাউকে জোর করে এ রাতের ইবাদত করতেই হবে তাতেও বাধ্য করানো হবে অনুচিত।আবার কেউ যদি এ রাতের ইবাদত-বন্দেগি করে,তাতে জোর করে বাধা প্রদান করাও ঠিক হবেনা।
সর্বোপরি আল্লাহর নৈকট্য লাভের যে কোন ইবাদত তাহাজ্জুদ সহ কুরআন তেলাওয়াত জিকির আজকারের ফযিলত অনেক বেশি।তাই লাইলাতুল মিন নিসফা শাবান বা লাইলাতুল বরাত নিয়ে বাড়াবাড়ি এবং ছাড়া না করাই উত্তম।
তবে আল্লাহ তা'য়ালা মুসলিম উম্মাহকে ইবাদত-বন্দেগিতে হাদিসের দিকনির্দেশনা মোতাবেক ইবাদত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন।তবে হালুয়া-রুটি ও সাজসজ্জা, মোমবাতি জ্বালানোর রুসুম রেওয়াজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুক।
No comments:
Post a Comment